ইন্তেকাল করেছেন তুরস্কের বিশিষ্ট মুহাদ্দিস শায়খ আমিন সির
তুরস্কের প্রখ্যাত ইসলামী ব্যক্তিত্ব ও বরেণ্য হাদিস বিশেষজ্ঞ শায়খ মুহাম্মাদ আমিন সিরাজ ইন্তেকাল করেছেন। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স ছিল আনুমানিক ৯০ বছর।
গতকাল শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধায় তাঁর পরিবার তাঁর ইন্তেকালের খবর জানিয়েছেন। তুরস্কের প্রখ্যাত আলেম শায়খ সিরাজ বেশ কিছু দিন আগে করোনায় আক্রান্ত হন। এরপর হাসপাতালে বেশ কিছুদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। অতঃপর আনুমানিক ৯০ বছর বয়সে মারা যান।
শায়খ সিরাজ আমিন তুরস্কের উত্তরাঞ্চলীয় টোকাট প্রদেশের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ঘরোয় পরিবেশে মাত্র ছয় বছর বয়সে কোরআন পাঠ সম্পন্ন করেন। তখনকার সময়ে কোরআন শিক্ষায় তুরস্কে নিষেধাজ্ঞা ছিল।
সন্তানদের আরবি ভাষা ও পবিত্র কোরআন শেখানোর অপরাধে তাঁর বাবা হাফেজ মুস্তফা আফেন্দিকে ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। ১৯৪০ সালে তাঁর পরিবার তাঁকে মেরজিফন প্রদেশ এরপর ইস্তাম্বুল নগরীতে পাঠান। বিখ্যাত আল ফাতেহ মসজিদের ইমাম উমর আফেন্দির তত্ত্বাবধানে অনেক দিন শিক্ষা লাভ করেন। এরপর শায়খ সুলায়মান আফেন্দির কাছে সহিহ বোখারি গ্রন্থ পাঠ করেন এবং হাদিসের সর্বপ্রথম ‘ইজাজত’ তথা অনুমোদন লাভ করেন।
১৯৫০ সালে শায়খ সিরাজ মিশরের বিশ্ববিখ্যাত আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান। মিশর সফর তখনকার সময়ে অনেক কঠিন ছিল। অনেক পথ গিয়েও প্রথম বার তাঁকে ফিরে আসতে হয়। কিন্তু উচ্চশিক্ষার দৃঢ় আকাঙ্ক্ষা তাঁকে মিশর যায়। এবং মিশরের জামিউল আজহারের উচ্চতর বিভাগে পড়াশোনা শুরু করেন। তৎকালীন সময়ে মিশর ও শাম অঞ্চলের শ্রেষ্ঠ ইসলামী ব্যক্তিত্বদের কাছে তিনি হাদিস ও তাফসির বিষয়ে পাঠ গ্রহণ করেন।
আধুনিক তুরস্কের ধর্মহীনতার বেড়াজালে যে নিভৃতচারী আলেমরা ইসলাম প্রসারে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেন, তাদের অন্যতম ছিলেন শায়খ আমিন সিরাজ। লেখালেখি, সম্পাদনা, অনুবাদ, পাঠদান, দাওয়াতসহ মুসলিম সমাজ পুনর্গঠনে সর্বত্র নিজেকে সম্পৃক্ত রাখেন তুরস্কের এ মহান মনীষী। সাইয়েদ কুতুব রচিত তাফসির গ্রন্থ ‘ফি জিলালিল কোরআন’ শায়খ সিরাজ তুর্কি ভাষায় অনুবাদ করেন।